Pages

 তাখাসসুসের প্রস্তুতি কীভাবে নিবো ? 

-মুফতী আবদুল্লাহ নাজীব হাফিযাহুল্লাহ


(১ম পর্ব)


তাখাসসুস আমাদের বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একসময় ভারত উপমহাদেশে মিশকাত জামাআতই ছিলো শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর

। পরবর্তী সময়ে দাওরাতুল হাদীস নামে আরেকটি জামাআত সংযোজিত হয়। এর আরও পরে যুক্ত হয় তাখাসসুস বা বিশেষায়িত উচ্চতর শিক্ষা। মেধাবী  তালিবে ইলমদের মাঝে তাখাসসুসে অধ্যয়নের এক বিশেষ আগ্রহ লক্ষ করা যায়। ইবতেদায়ী মারহালা থেকেই তারা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। স্বপ্নপূরণের পথে আগুয়ান হতে কমবেশি মেহনত-মুজাহাদাও অব্যাহত থাকে। ফযীলত ও তাকমীল স্তরে এসে এই আগ্রহ এক বিশেষ মাত্রা লাভ করে। ফলে তারা প্রায়শই জানতে চান, আগামীতে তাখাসসুসে পড়ার ইচ্ছা রাখি। প্রস্তুতি কীভাবে গ্রহণ করব? কী কী বিষয় পরীক্ষা হবে?


লক্ষ করলে দেখা যায় যে, তাদের কৌতূহল ও আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে পরীক্ষার প্রস্তুতি ও তাতে সফল হওয়া। এ নিয়ে তাদের বেশ দৌঁড়ঝাপ দৃষ্টিগোচর হয়। প্রত্যেকেই নিজের কাঙ্ক্ষিত ফনে উত্তীর্ণ হওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করে। বক্ষমাণ প্রবন্ধে পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতি ও তাতে সফল হওয়ার আলোচনা না করে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাখাসসুসের পূর্বযোগ্যতা ও তা অর্জনের পদ্ধতি নিয়ে কিছু মৌলিক আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করব। ইন শা আল্লাহ।


উদ্দিষ্ট ফনের পূর্বে প্রস্তুতিমূলক পড়াশোনা


জানা কথা যে, কোনো ফনের গভীরে প্রবেশের পূর্বে মাবাদিয়াত পড়তে হয়। ফনের সহায়ক জ্ঞানও অর্জন করতে হয়। অন্যথায় ফনের গভীরে প্রবেশ করা দুঃসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ। উপকারের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কাই প্রবল। আহলে ইলমের নিকট এটি একটি বিদিত নীতি ও কানুন। আমাদের দরসে নিযামীতেও মূল ফনে প্রবেশের পূর্বে প্রস্তুতিমূলক প্রাথমিক কিছু ফন পড়ানো হয়। দরসে নিযামীর বিন্যাসে উলূমে ইসলামিয়াকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এক. علوم عالية। দুই. علوم آلية। প্রথম প্রকারকে উলূমে মাকসূদাহও বলা হয়। দ্বিতীয় প্রকার হলো, মাধ্যম পর্যায়ের ইলম। ইলমুন নাহব, সারফ, বালাগাহ, লুগাহ, মানতিক ইত্যাদি এই দ্বিতীয় প্রকারের অন্তর্ভুক্ত। উলূমে মাকসূদা অর্জনে যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এবং এগুলো পঠন-পাঠনের মূল উদ্দেশ্যেই হলো উলূমে মাকসূদা যথাযথভাবে বুঝা ও আয়ত্ত্ব করা। ফলত এ সকল ফনে যে যত যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনে সক্ষম হবে সে তত উলূমে মাকসূদাহয় পারঙ্গমতা হাসিল করতে পারবে।


তাখাসসুস হলো পড়ালেখার সর্বোচ্চ স্তর। এ উচ্চস্তরটি একদিকে যেমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,  অপরদিকে তা খুবই কন্টাকাকীর্ণ ও মেহনতসাপেক্ষ। এর জন্য আরও বেশি প্রস্তুতিমূলক পড়াশুনা ও যোগ্যতার প্রয়োজন। কারণ, তাখাসসুসের মূল প্রতিপাদ্য হলো, নিয়মতান্ত্রিকভাবে মানসম্পন্ন তাহকীকী ও গবেষণামূলক কাজ শেখা ও সম্পাদন করা। বলা বাহুল্য যে, নির্দিষ্ট কোনো কিতাব পঠন-পাঠন আর কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণার মাঝে রয়েছে বিস্তর ফারাক। ফলে তাখাসসুসের জন্য নিছক ইবারত বোঝার যোগ্যতা থাকাটাই যথেষ্ট নয়। বরং আরও অনেক বিষয়েই দক্ষতা অর্জন করা অপরিহার্য। তাখাসসুসে দাখেলা নেওয়ার পূর্বেই যা অর্জন করা উচিত।


দরসে নেযামীর পাঠদান পদ্ধতি


দরসে নিযামীর পর আসে তাখাসসুসের মারহালা। দরসে নিযামী আমাদের মাঝে মালাকা ও ইসতিদাদ তৈরির কাজ করে। তবে লক্ষ্যণীয় যে, আমাদের পড়াশুনার যে আন্দায ও ধারা বর্তমানে প্রচলিত, এতে আমরা তাখাসসুসের জন্য কতটুকু যোগ্য ও প্রস্তুত হচ্ছি। এর সুস্পষ্ট উত্তরের জন্য আমাদের দেখতে হবে, দরসে নিযামীর পাঠদান ও আমাদের অধ্যয়নপদ্ধতি।


দরসে নিযামীর প্রবর্তক হিসেবে মোল্লা নিযামুদ্দীন সিহালবী রহ. (১১৬১হি.) এর নাম সুপ্রসিদ্ধ। যদিও নেসাব প্রণয়নের মূল কাজ এর পূর্বে তাঁর পিতা মোল্লা কুতুবুদ্দীন শহীদ রহ. (১১০৩হি.) নেসাবের দরস থেকেই শুরু হয়েছে। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ আল্লামা শিবলী নোমানী রহ. (১৩৩২হি.) বলেন:


درس نظامیہ اگر چہ ملا نظام الدین صاحب کی طرف منسوب ہے لیکن در حقیقت اس کی تاریخ ایک پشت اوپر سے شروع ہوتی ہے یعنی ملا نظام الدین کے والد سے جن کا نام ملا قطب الدین تھا۔ (مقالات شبلی ۳-۱۱۱)


মোল্লা কুতুবুদ্দীন রহ. এর দরসদান পদ্ধতি সম্পর্কে শিবলী রহ. বলেন:


ملا صاحب نے درس کا ایک خاص طریقہ اختیار کیا تھا جو خود ان کا قائم کردہ تھا، وہ ہر فن کی صرف ایک جامع اور مستند کتاب پڑھاتے تھے کہ شاگرد کو تمام مسائل پر مجتہدانہ عبور ہوجاتا تھا، رسالہ قطبیہ میں ہے: مولانا ے شہید (ملا قطب الدین) از ہر فن یک یک کتاب میخوانیدند وشاگران محقق فی شدند، ملا نظام الدین اور مولانا بحر العلوم نے اس پر اضافہ کیا۔ (مقالات شبلی ۳-۱۱۳)


মোল্লা কুতুবুদ্দীন রহ. এর দরসদান পদ্ধতি থেকে প্রতিয়মান হয়, তাঁর দরস কিতাব আর কিতাবের ইবারতে সীমাবদ্ধ থাকতো না। দরস হতো তাহকীকী ও ফন্নী আন্দাযে। যার ফলে শাগরিদগণও সেই বিষয়ে মুহাক্কিক বনে যেতো।


মোল্লা নিযামুদ্দীন রহ. এর দরসদান পদ্ধতি কেমন ছিলোÑ তা বিস্তারিত জানা না গেলেও স্বীয় পিতার মতই ছিলো বলে ধারণা করা যায়। মোল্লা নিযামুদ্দীন রহ. এর দরসদান পদ্ধতি কেমন ছিলোÑ এ প্রসঙ্গে আল্লামা আবদুল হাই হাসানী রহ. বলেন:


اب طریقہ تعلیم بگڑ گیا ہے، ملا نظام الدین کا طریقہ درس یہ تھا کہ وہ کتابی خصوصیتوں کا چنداں لحاظ نہیں کرتے تھے، بلکہ کتاب کو ایک ذریعہ قرار دے کر اصل فن کی تعلیم دیتے تھے، اسے طرز تعلیم نے ملا کمال الدین، بحر العلوم، حمد اللہ جیسے اہل کمال پیدا کیے تھے۔ (اسلامی علوم وفنون ہندوستان میں ص / ۳۱=۳۲)


মোটকথা, তাদের দরসদান পদ্ধতি ছিলো ফন্নী ও তাহকীকী। ফনই ছিল মাকসাদ ও মুখ্য। কিতাব ছিলো মাধ্যম ও সহায়ক। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই দরসদান পদ্ধতি আর অব্যাহত থাকেনি। যেমনটি আবদুল হাই হাসানী রহ. বলেছেন যে, اب طریقہ تعلیم بگڑ گیا ہے। ফনের চেয়ে কিতাব প্রধান হয়ে উঠে। কিতাব হল্ ও ইবারত হল্ই দরসের মূল উপজীব্য বনে যায়। ইবতেদায়ী স্তর থেকে দাওরা পর্যন্ত প্রায় একই পদ্ধতিতে দরস দেওয়া শুরু হয়। এ ধারার উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা স্ব স্থানে স্বীকৃত। কারণ, সর্বত্র দীর্ঘ ফন্নী তাকরীর কাম্য নয়। বরং ক্ষতিকর। তবে যেখানে তালিবে ইলমের মাঝে ফন্নী মালাকা তৈরি করা প্রয়োজন সেখানেও স্রেফ ইবারত হল করার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকাটাও কাম্য নয়। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশমীরী রহ. দাওরায় হাদীসের দরসপদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন সাধন করেন। তিনি নির্দিষ্ট কিতাবে সীমাবদ্ধ না থেকে বিষয়ভিত্তিক তাহকীকী ও ফন্নী আলোচনা আরম্ভ করেন। এ প্রসঙ্গে আল্লামা আনযার শাহ কাশমীরী রহ. বলেন:


شاہ ولی اللہ رحمہ اللہ کا طریق درس حدیث کی ضروری وضاحت سے زیادہ نہیں تھا، مولانا گنگوہی ومولانا نانوتوی رحمہ اللہ نے اس میں فقہ حنفی کے مآخذ کی نشاندہی کا اضافہ کیا لیکن مولانا کشمیری قدس سرہ العزیز نے عام درسگاہی طریق درس میں یکسر انقلاب بر پا کیا، آپ نے حدیث کی شرح وتفصیل میں صرف ونحو، فقہ واصول فقہ، معانی وبلاغت، اسرار وحکم، سلوک وتصوف، فلسفہ ومنطق، سائنس وعصری علوم کا ایک گرانقدر اضافہ، رجال کی بحثیں، مصنفین ومؤلفین کی تاریخ وسوانح، تالیفات وتصنیفات پر نقد وتبصرہ آپکے درس کا ایک امتیاز تھا، اسکے نتیجہ میں درسی تقریریں بجائے مختصر ہونے کے طویل ہوگئی۔۔۔ مولانا محمد طیب صاحب مہتمم دار العلوم دیوبند نے بھی اس حقیقت کا اعتراف کرتے ہوئے حضرت سے معتلق اپنے طویل مقالہ میں لکھا ہے کہ ্থحضرت شاہ صاحب کے درس حدیث میں کچھ ایسی خصوصیات نمایاں ہوئیں جو عام طور سے دروس میں تھیں، بلکہ واقعہ یہ ہے کہ آپ کا انداز درس دنیائے درس وتدریس میں ایک انقلاب عظیم ثابت ہوا۔ (نقش دوام ص/۱۴۷=۱۴۹)


আল্লামা কাশমীরী রহ. এর পর থেকে ফন্নী ও তাহকীকী দীর্ঘ তাকরীরের একটি ধারা আরম্ভ হয়। কিন্তু কিছুকাল পর এ ধারাতেও ফন্নী ও ইলমী উসূল ও যাওয়াবিত অনুসৃত হয়নি। ইবারত ও পাশাপাশি কিছু নুকতা ও ফাওয়ায়িদ পর্যন্ত দরসী আলোচনাগুলো সীমিত থাকত। ইল্লা মা শা আল্লাহ।


সর্বোপরি, বর্তমানে দরসে নিযামীর দরসদান পদ্ধতি মূলত কিতাব ও ইবারতকেন্দ্রিক। ইবারত হল করাকেই সর্বোচ্চ জ্ঞান করা হয়। ইবারত হল হয়েছে তো কিতাব হল হয়েছেÑ এমন ভাবনা সর্বত্র বিরাজমান। তাই দরসে নিযামীর কিতাবগুলোর শরাহগ্রন্থেও সাধারণত ইবারতকেন্দ্রিক আলোচনা প্রাধান্য পায়।


আমরা যারা দরসে নেযামীতে প্রায় এক দশক লেখাপড়া করি। ইবারত হল করার প্রতি পূর্ণ জোর ও মনোযোগ দিই। এর বাইরে সর্বোচ্চ বাইনাস সুতুর, হাশিয়া দেখি। দীর্ঘদিন এ ধারায় লেখারপড়ার কারণে আমাদের চিন্তা চেতনা, যেহেন ও দেমাগ, মন ও মনন সবই গড়ে ওঠে ইবারত ও নির্দিষ্ট কিতাবকেন্দ্রিক। এর ফলে আমরা তাখাসসুসে এসেও কিতাব ও ইবারতকেন্দ্রিক পড়াশোনার প্রতি বেশি ঝুঁকি। নির্দিষ্ট কিতাবের দরস এবং দরসের কিতাব ও ইবারত হল করাকেই প্রণিধানযোগ্য মনে করি। যার ফলে তাখাসসুস স্তর শেষ করেও আমাদের মাঝে গবেষণা ও তাহকীকের মেযাজ তৈরি হয় না। স্বতন্ত্ররূপে গবেষণা ও তাহকীক করার সক্ষমতাও অর্জন হয় না। ফলে তাখাসসুস স্তর অতিক্রম করেও গবেষণা ও তাহকীকী কাজে ব্যর্থতায় পরিচয় দিতে হয়।


তাখাসসুসের মূল লক্ষ্য ও কাজ


তাখাসসুস স্তরের মূল লক্ষ্য ও কাজ কীÑ তা পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। উপমহাদেশে তাখাসসুসের বর্তমান ধারার আনুষ্ঠানিক প্রবর্তক আল্লামা ইউসূফ বানুরী রহ. (১৩৯৭হি.)। তিনি درجہ تخصص کے قواعد وضوابط বিষয়ক প্রবন্ধে তাখাসসুসের প্রয়োজনীয়তার আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন:


قدیم طرز تعلیم کے تحت علم حاصل کرنے والے علماء میں بھی متخصص ہوا کرتے تھے اور جدید طرز تعلیم میں تو تخصص اور ڈکٹریٹ کو بڑی اہمیت حاصل ہے، ان اسباب وحالات کے پیش نظر ضروری تھا کہ دینی درس گاہوں کی اس کمی کو پورا کرنے کیلئے کوئی اقدام کیا جائے۔


তাখাসুসসে দরসদান ও অধ্যয়নপদ্ধতি কেমন হবেÑ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন:


۱- کسی بھی کتاب کی تدریس سبقا سبقا لازم نہ ہوگی بلکہ استاذ اپنی صوابدید کے مطابق کتب نصاب تخصص میں سے جس کتاب یا اس کے کسی حصہ کو سبقا پڑھانا ضروری سمجھے گا پڑھائے گا ورنہ طلبہ استاذ کی مقرر کردہ ترتیب اور ہدایت کے مطابق خود کتب نصاب کی تیاری کریں گے اور امتحان دیں گے۔


۲- استاذ مجوزہ علم وفن کے مہمات مسائل و ابواب کی فہرس بنا کر طلبہ کو دینگے اور ان کی تیاری کے لئے اس علم وفن کی اہم ترین داخل نصاب وغیر داخل نصاب کتابوں یا ان کے ضروری ابواب ومباحث کا مطالعہ کرائیں گے، اور اس مطالعہ اور تلاش وتحقیق میں طلبہ کو جو مشکلات یا شکوک وشبہات پیش آیئں گے استاذ ان حل کرائینگے اور خود بھی ان مسائل ومباحث پر با قاعدہ تیاری کر کے تقریر واملا کرائیں گے۔


۳- طلبہ اس مطالعہ وتحقیق کے ساتھ ساتھ ان مسائل ومباحث مہمہ پر روزانہ اپنی یادداشتیں مرتب کرتے راہنگے اور ہر ہفتہ کی یادداشتیں جمعرات کے دن استاذ کو دینگے اور وہ انکو دیکھ کر ان کے نقائص اور خامیوں سے طلبہ کو آگاہ کرکے خود انہی سے اصلاح کرائیں گے۔۔۔(تخصص فی علوم الحدیث کا دستور العمل اور دو سالہ روئداد ص/۵-۶)


মোটকথা, নির্দিষ্ট কিতাব নয়; ফন ও শাস্ত্রই হলো তাখাসসুসের কেন্দ্রীয় কাজ; তাহকীকী ও গবেষণামূলক কাজ শেখা ও সম্পাদন করা যার অন্যতম প্রতিপাদ্য। শায়খুল আযহার শায়খ আবদুল হালীম মাহমুদ রহ. যখন পাকিস্তান সফরে আল্লামা বানুরী রহ. এর প্রতিষ্ঠিত জামিআতুল উলূমিল ইসলামিয়া পরিদর্শন করেন। তখন জামিআর তাখাসসুস বিভাগগুলোর কার্যক্রম দেখে অভিভূত হন। এ প্রসঙ্গে আল্লামা বানুরী রহ. বলেন:


الحمد للہ کہ موصوف کو مدرسہ دیکھ کر خوشی بلکہ حیرت ہوئی۔۔۔ ہمارے طلبہ کے تخصصات (ڈاکٹریٹ) کے بعض مقالات کا جب ان کو علم ہوا تو خواہش ظاہر فرمائی کہ دو مقالے جن میں سے ایک عبد اللہ بن مسعود پر تھا وہ ادارہ ازہر شریف کی طرف سے شائع کریں گے، یہ حق تعالی جل ذکرہ کا احسان ہے کہ ہمارے ایک گمنام ادارے کی حیثیت اتنی کردی کہ دنیائے اسلام کی سب سے بڑی علمی یونیورسٹی اس اس کے طلبہ کے مقالات کو شائع کرنے کی خواہش کرتی ہے۔ (بصائر وعبر ۲ /۲۵۹)


মাযাহিরুল উলূম সাহারানপুরে উলূমুল হাদীস বিষয়ে তাখাসসুস বিভাগ খোলার পূর্বে মাজলিসে শুরার পক্ষ থেকে তাখাসুসের নেসাব ও নেযাম বিষয়ক পরামর্শের জন্য একটি চিঠি তৈরি করা হয়। চিঠিটি উপমহাদেশের ১৫জন খ্যাতনামা আলেমে দীনের কাছে প্রেরণ করা হয়। তাদের মাঝে যাঁরা উত্তর দিয়েছেন তাঁদের উত্তরপত্র একত্র করে একটি রুয়েদাদ প্রস্তুত করা হয়েছে। যা شعبہ تخصص حدیث کا قیام اور مجلس شوری کی تجویز নামে প্রকাশ করা হয়। সেখানে প্রত্যেকই নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে আল্লামা আহমদ রেযা বিজনুরী রহ. দীর্ঘ উত্তর লিখেছিলেন। তিনি তাখাসসুসের তালিবে ইলমদের সুযোগসুবিধা প্রসঙ্গে বলেন:


مسلم یونیورسٹی علی گڈھ اور ہندستان کی دوسری یوینورسٹیاں بیسیوں شعبوں میں ڈکٹریٹ کرارہی ہیں، اور ڈبل ڈبل کرارہی ہیں، ان کے اسکالر یورپ و امریکہ میں بھی جاکر ڈبل ڈبل ڈاکٹریٹ کررہے ہی،اور وہ ملک ان اسکالروں کے مع اہل عیال کے۳-۳ سال ارو ۴-۴ سال کے خرچ اٹھاتے ہیں، ان کے مقابلہ مین اگر اہم بھی حوصلہ وہمت کرکے اپنے تخصص فی الحدیث کے اسکالروں پر چندلاکھ سالانہ خرچ برداشت کرلیں توعلم حدیث کے شایان شان کارنامہ انجام پائے گا۔ ان شاء اللہ۔ (شعبہ تخصص حدیث کا قیام اور مجلس شوری کی تجویز ص/۳۹)


এখানে সংক্ষেপে কিছু বক্তব্য তুলে ধরা হলো। আশা করি, এর মাধ্যমে তাখাসসুস নিয়ে বড়দের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, ভাবনা ও পরিকল্পনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। তাখসসুসের মূল লক্ষ্য যে গবেষণা ও তাহকীকের যোগ্যতা অর্জন করা এবং গবেষণা ও তাহকীকী কাজ করা, নিছক দরস বা ইবারত হল নয়Ñ তাও প্রতিভাত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আরও অনেকেরই বক্তব্য রয়েছে। পরবর্তী সময়ে উচ্চশিক্ষা, তাখাসসুস ও ইসলামী শিক্ষাবিজ্ঞান নিয়ে বিস্তারিত কাজ করার ইচ্ছা আছে। আল্লাহ তাআলাই তাওফীকদাতা।


Post a Comment

Previous Post Next Post