Pages

তাফসীরে রুহুল মাআনী

‘তাফসীরের বিশ্বকোষ’ খ্যাত এ তাফসীরটি খ্যাত ৩০ খণ্ডে। লিখেছেন আল্লামা মাহমুদ আলূসী রহ. (মৃ. ১২৭০ হি.)। আমার অসম্ভব ভালো লাগা একটি তাফসীর এটি। যেহেতু তিনি হিজরী তের শতকের মানুষ এবং তাঁর পর্যন্ত দিগ্বিজয়ী সহস্র তাফসীরগ্রন্থ অস্তিত্বে এসেছিল, তাই তাঁর তাফসীরে পূর্ববর্তীদের সবার তাফসীরের প্রয়োজনীয় ও উপকারী কথাগুলো উদ্ধৃত করেছেন। বিশেষত তিনি বেশি উদ্ধৃত করেছেন তাফসীরে কাবীর, বায়যাবী, হাশিয়াতুশ শিহাব, আবুস সাঊদ ও ইবনে আরাবী থেকে।
আলূসী রহ. যখন বলেন, 'ক্বালাল ইমাম' (ﻗﺎﻝ ﺍﻹﻣﺎم), তখন তাঁর উদ্দেশ্য হয় ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহ.। যখন বলেন, 'ক্বালাল ক্বাদ্বী' (قال القاضي), তখন তিনি মুরাদ নেন ইমাম বায়যাবী রহ.-কে। যখন বলেন, 'ক্বালা শাইখুল ইসলাম' (ﻗﺎﻝ ﺷﻴﺦ ﺍﻹﺳﻼﻡ), এর দ্বারা উদ্দেশ্য হন ইমাম আবুস সাঊদ রহ.। এভাবে জুরজানী (الجرجاني) দ্বারা উদ্দেশ্য ইমাম আবদুল কাহির জুরজানী রহ.। আর মীর সায়্যিদ শরীফ জুরজানী রহ.-কে তিনি 'ক্বালাস সায়্যিদ' (السيد/السيد السند) বলে উল্লেখ করেন। যখন বলেন, 'ক্বালাশ শাইখুল আকবার' (قال الشيخ الأكبر), তখন উদ্দেশ্য নেন বিখ্যাত সুফী-সাধক মুহিউদ্দীন ইবনে আরাবী রহ.-কে। আর 'ক্বালাশ শিহাব' (قال الشهاب) মানে আল্লামা শিহাবুদ্দীন খাফাজী রহ.।
তাঁর তাফসীর পড়া মানে পূর্ববর্তীদের তাফাসিরের সমষ্টির সার পড়ে ফেলা। আল্লামা সাঈদ আহমদ পালনপুরী রহ. তাঁর 'আলআউনুল কাবীর' বইয়ে লিখেছেন, বর্তমান পৃথিবীতে সবচে' জামে-মানে (সর্বসমাহার) তাফসীর হচ্ছে «রুহুল মাআনী»।
আল্লামা ইউসুফ বিন্নুরী রহ. «يتيمة البيان في شيء من علوم القرآن» গ্রন্থে লিখেন, সহীহ বুখারীর শরাহসমূহের মাঝে যেমন «ফাতহুল বারী», কুরআন মজীদের তাফসীরের ক্ষেত্রে এমন হল «রুহুল মাআনী»।

মাওলানা আবদুল কাদের মাসুম

Post a Comment

Previous Post Next Post